মৌলভীবাজারে বিনা লাভের বাজার কার্যক্রম শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত এই বিপণন কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের চৌমুহনা পয়েন্টে দেখা যায় ক্রেতারা নিত্যপণ্য কিনতে সেখানে ভিড় করেছেন। সাধারণ বাজারের তুলনায় প্রতিটি পণ্যের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কম বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
রিকশাচালক মিফতা মিয়া বলেন, বন্যার কারণে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক চড়া। স্থানীয় বাজারেই সবজির দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। তবে এখানে কম দামে পেয়ে আমি অনেক সবজি কিনেছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মৌলভীবাজারের ছাত্র প্রতিনিধি জাকারিয়া ইমন বলেন, ভোক্তারা যেন ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত না হন, তাই ভোক্তাদের স্বার্থে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে পাইকারি বাজার থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পণ্যের মূল্যের ব্যবধান কমেছে। আমরা মোট ১৫টি পণ্য বিক্রি করছি। আলু, বেগুন, শশা, লাউ, কাঁচা মরিচ, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য সুলভ মূল্যে বিক্রয় করা হচ্ছে।
এখানে ধনে পাতার কেজি ১০০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা কেজি, মুলা ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ প্রতিটি ৩০ টাকায় মিলছে। প্রতি কেজি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঝিঙ্গা ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৩০ টাকা ও শসা ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কয়েকজন ক্রেতা জানান, নিম্নবিত্তের জন্য এটি বেশ বড় একটি উদ্যোগ। তবে কৃষিপণ্যের পাশাপাশি মাছ, মাংস, দুধ বিক্রি করা হলে দরিদ্র মানুষ আরও উপকৃত হতো।
গীজাপাড়া এলাকার গৃহিণী সেতেরা বেগম বলেন, বাজারে এখন ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না। কয়েক বছর আগে ৩০০ টাকায় ব্যাগ ভর্তি হলেও এখন হাজার টাকাতেও হচ্ছে না। সব পণ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়েছে। দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। নিয়মিত বাজার তদারকি করে যেন দামটা মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা হয় সেই দাবি করি।
সবজির বাজারে আসা আব্দুল আলীম বলেন, আমি শহরে থাকি। আমার বাবা গ্রামে সবজি আবাদ করেন। এত শ্রম ও কষ্ট করার পর বাবা যে দামে সবজি বিক্রি করেন, বাজারে এসে দাম কখনো কখনো দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে যায়। এটা সম্পূর্ণ নজরদারির ব্যর্থতা। আর এই ব্যর্থতা আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষের জীবনকে কষ্টের করে তুলছে। এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের কারণে কিছু মানুষ কেজিপ্রতি প্রায় ২০ টাকা কম দরে সবজি কিনতে পারছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মৌলভীবাজারের জেলা ছাত্র প্রতিনিধি সামায়েল রহমান জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় ১৫ ধরনের শাকসবজি নিয়ে তাদের এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সকাল থেকে প্রায় ৫০০ ক্রেতা ন্যায্যমূল্যে কাচাঁমাল ক্রয় করার সুযোগ পেয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবেদ রহমান, তানজিয়া শিশির, আশরাফ, জাকারিয়া ইমন প্রমুখ।
ওমর ফারুক নাঈম/কেএসআর