ফ্যাসিবাদ বলার আগে আয়নায় নিজেদের চেহারাটা দেখেন: খোকন

0
3


 

দেশের বিভিন্ন স্থানে পরীক্ষার হল ও শ্রেণিকক্ষ থেকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও পিটুনির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘অন্যকে ফ্যাসিবাদ বলার আগে আয়নায় নিজেদের চেহারাটা দেখেন, আপনারা কী করছেন? যেই রেওয়াজটা চালু করেছেন এটার প্রতিক্রিয়াটাও কী হতে পারে, অনুমান করে নিয়েন।’

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) নিজের ফেসবুকে এক পোস্টে এসব কথা লেখেন তিনি।

আশরাফুল আলম খোকন লেখেন, ক্ষমতা কোনো চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত না। কখনো না কখনো পরিবর্তন হবেই, যতই শক্তিশালী হোক না কেন। আমাদের কারো কারো আচরণও চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মতই ছিলো। এখনকার সরকারের শারীরিক ভাষা দেখে মনে হচ্ছে, তারা আজীবনের জন্য ক্ষমতায় এসেছেন। সবকিছুতেই, ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করছেন।

উদাহরণ দিয়ে খোকন লেখেন, ‘যারা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছিলেন, এমনকি যারা সমর্থক, তাদের পড়াশোনা এখন পুরোপুরি বন্ধ। তারা ক্লাসে যেতে পারছেন না, পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না। শ্রেণিকক্ষে তাদেরকে মারা হচ্ছে, পুলিশে দেয়া হচ্ছে।’

‘শ্রেণিকক্ষ থেকে গ্রেফতার করার রেওয়াজ দেশে এই সরকার প্রথম চালু করেছে’ দাবি করে সাবেক এই উপ-প্রেস সচিব লেখেন, ‘ এতোগুলো শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন নষ্ট করার অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে? অন্যকে ফ্যাসিবাদ বলার আগে আয়নায় নিজেদের চেহারাটা দেখেন, আপনারা কী করছেন? যেই রেওয়াজটা চালু করেছেন এটার প্রতিক্রিয়াটাও কী হতে পারে, অনুমান করে নিয়েন।’

‘মনে করার কোনো কারণ নেই, আপনাদের সরকার দেশের শেষ সরকার, এরপর আবার কোনো না সরকার আসবে। তখন যদি এই রেওয়াজ পরবর্তী সরকার সমর্থকরা চালু করে, সামাল দিবেন কিভাবে?’ যোগ করেন আশরাফুল আলম খোকন।

গত ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২ থেকে এ বিষয়ে গেজেট জারি করা হয়। এতে সই করেন জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২ এর সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।

গেজেটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে গত ১৫ বছরে স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এ সম্পর্কিত প্রামান্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।

 

সেখানে আরও বলা হয়, ১৫ জুলাই ২০২৪ তারিখ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শতশত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে যে, ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

গেজেটে বলা হয়, সরকার ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো এবং ওই আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করলো। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।

এমএমএআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।