ফজলে করিমের ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে বিক্ষোভ

0
2


চট্টগ্রাম-৬ আসনের (রাউজান) সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর ফাঁসি, তার স্ত্রী রিজোয়ানা ইউসুফ এবং ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরীকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ছাত্র-জনতা।

রোববার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে আদালত ভবনসংলগ্ন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ‘বৈষম্যবিরোধী সাধারণ ছাত্র ও চট্টগ্রামের সর্বস্তরের জনগণের’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ সময় ফজলে করিমকে কারাগার থেকে বিক্ষোভকারীরা ফজলে করিমকে আদালতে হাজির না করে ভার্চুয়ালি মামলার শুনানির আদেশ বাতিলের দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, ২১ জুলাই স্থানীয় দৈনিকে ফজলে করিম ঘোষণা দিয়েছিল চট্টগ্রামকে পাহারা দিতে রাউজানবাসী যথেষ্ট। তার গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে আমাদের ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে। ফজলে করিমের পাথরঘাটার বাসা থেকে রাউজানের গুণ্ডারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছিল। এখন ফজলে করিমকে গ্রেফতারের পর তাকে আলাদা সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তাকে ডিভিশন দেওয়া হচ্ছে। তাকে অনলাইন শুনানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে, কেন?

এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘অনলাইনে কিসের কোর্ট, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ফজলে করিমের টাকার গোলাম, প্রশাসন তোমায় সালাম’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, জুইন্নার বিচার চাই’ এ রকম নানা স্লোগান দেন। এছাড়া ফজলে করিমের ছবিযুক্ত ব্যানার পদদলিত করে এবং জুতো নিক্ষেপ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সমাবেশের একপর্যায়ে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ যোগ দেন আইনজীবীরাও। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পিপি আশরাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘ একমাস ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে এ দেশের ছাত্র-জনতা গুলির মুখোমুখি হয়ে আন্দোলন করে স্বাধীন দেশ অর্জন করেছেন। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাবো আন্দোলনে যেসমস্ত মানুষ শহীদ হয়েছে তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে। যেসমস্ত ছাত্র জনতা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তাদের পাশে অবশ্যই দাঁড়াতে হবে। আজকের এই প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে আমি জানাতে চাই সরকারকে, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের সারা বাংলাদেশ থেকে বিদায় করতে হবে।’

আইনজীবীরা বলেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূসকে যখন মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল তখন তাকে সরাসরি আদালতে এসে হাজিরা দেওয়া লাগতো। ফজলে করিমের নামে ২৪টি মামলা রয়েছে। যার ৯টিই হত্যা মামলা। এসবের বিচার কি আমরা পাবো না?

তারা বলেন, ‘রাউজানের প্রাণের দাবি, মা ও মাটি-মানুষের দাবি যারা ১৭ বছর কবর জিয়ারত করতে যেতে পারেনি ফজলে করিমকে ফাঁসি দিতে হবে। আমরা কোনো অন্যায্য দাবি নিয়ে ফাঁসি চাচ্ছি না। আমাদের ছাত্রদলের নেতা নুরু ভাইয়ের হত্যাসহ গুম-খুন করে ফজলে করিম পুরো রাউজানকে আয়নাঘরে পরিণত করেছিল। সেই ফজলে করিম জুনুর আমরা ন্যায্য বিচার চাই। এই একটি ক্ষেত্রে রাউজানবাসী দলমত ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।’

৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর গা ঢাকা দেন রাউজানের এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর ফাঁসি, তার স্ত্রী রিজোয়ানা ইউসুফ এবং ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরী।

গত ১২ সেপ্টেম্বর সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত এলাকা থেকে ফজলে করিম চৌধুরীকে আটকের কথা জানায় বিজিবি। আটকের পর ফজলে করিমকে আখাউড়া থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি। এখন পর্যন্ত ফজলে করিমের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো, অস্ত্রের মুখে জমি লিখিয়ে নেওয়া, ভাঙচুর, দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ ১০টি মামলা হয়েছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায়।

এএজেড/জেএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।