ডেমরায় ২১ দিনের ব্যবধানে দুই খুন, চুলের সিঁথি দেখে আসামি শনাক্ত

0
2


মনিরুল ইসলাম, ঢাকা:

ডেমরায় ২১ দিনের ব্যবধানে দুই খুনের আসামিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। চুলের সিঁথি দেখে ওই আসামিকে শনাক্ত করা হয়। আসামিকে ধরতে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের রিকশাচালক ও মালিকের ছদ্মবেশও নিতে হয়। চাঞ্চল্যকর এ ঘুনের ঘটনার তদন্তে নেমে আলোচিত চনপাড়ায় অপরাধী একটি চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ।

রাজধানীর শেষপ্রান্তের নির্জন বিস্তীর্ণ এলাকা অথবা খাল-বিলের পাশের লোকালয়ে ঘটে নানা অপরাধকর্ম। কিন্তু নানান এসব অপরাধের খবর কজনই বা রাখেন? সম্প্রতি ডেমরার আমুলিয়া মডেল টাউন এলাকায় খুন হন দুই জন। ভুক্তভোগীরা নিম্ন আয়ের এবং তাদের খুনের কায়দাও এক। প্রশ্ন হলো, কে তাদের খুন করলো, আর এর মোটিভই বা কী?

সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মধ্যরাতে যে দুজন যাত্রীকে দেখা গেছে, তারা আসলে যাত্রীবেশী অপরাধী। ঘটনার শুরু এ বছর ১৩ মার্চ। আমুলিয়া মডেল টাউনের অন্ধকার জায়গায় খুন হন রিকশাচালক মিরাজ হোসেন। এর ২০ দিন পর একই জায়গায় খুন হন রিকশাচালক স্বপন ইসলাম।

ক্লু-লেস দুটি খুন। তদন্তে নামে পুলিশ। জানা গেছে, মাদকের টাকা জোগাতে একটি চক্র রিকশা চুরি করতে নামে মাঝরাতে। রিকশাচালককে ভয় দেখিয়ে ছিনতাইয়ে ব্যর্থ হয়ে খুন করে চক্রটি।

ডিএমপি ডেমরা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মধুসূদন দাস জানান, রিকশা ছিনতাই করে এমন পাঁচটি গ্রুপের আমরা সন্ধান পাই। পরবর্তীতে আমরা তাদের একে একে ধরা শুরু করি। এই মার্ডার দুইটার মোটিভ মিলছিলো না। দেখা যায় তারা রিকশা ছিনতাই করে কিন্তু অন্য উপায়ে করে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজে দেখি একজনের ডানপাশে সিঁথি করা। তারপর যতজনকে ধরেছি দেখার চেষ্টা করেছি ডানপাশে সিঁথি আর পরনে লাল জামা আছে কিনা বা তার বাসায় পরিহিত কোনো লাল শার্ট আছে কিনা। এই বিষয়টা আমরা দেখতে পাই সে নয়ন। এই বিষয়টা আমাদের জাহিদ এবং নাঈম জানায়। পরে আরেকটু কঠিনভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা স্বীকার করে যে এই লোকটা নয়ন এবং পাশে বসা দুইজন আমরা অর্থ্যাৎ জাহিদ আর নাঈম।

২টি খুনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ডেমরা থানার এস আই বেলাল আজাদ। আসামি শনাক্তে যিনি রিকশা মালিক ও চালকের ছদ্মবেশও নিয়েছেন। তিনি বলেন, এই মামলাটি ডিটেক্ট করতে আমাদের প্রথমে বন্দরে যেতে হয়েছে। বন্দর থেকে ফতুল্লায় গেছি, সিদ্ধিরগঞ্জ গেছি, রূপগঞ্জ গেছি, মদনপুর গেছি। এসব জায়গায় পেছনে আমাদের কিছু টেকনিক ছিল। আমাকে একজন ভিকটিমের সাথে রিকশামালিক হিসেবেও কথা বলতে হয়েছে। যেখানে আমি একজন রিকশামালিক, আমার একটা রিকশা চুরি হয়েছে। এরকম কিছু শর্ট টেকনিক অ্যাপ্লাই করতে হয়েছে।

দুই খুনে সরাসরি জড়িত জাহিদ ও নাঈমকে আটকের পর আরেক অপরাধী নয়নের নাম জানায় তারা। আলোচিত চনপাড়ার সন্ত্রাসী ক্রসফায়ারে নিহত সিটি শাহিনের সহযোগী এই নয়ন। তবে তাকে এখনও আটক করা যায়নি। পুলিশ বলছে, মাত্র ৫-১০ হাজার টাকার জন্য এরা মিনিটের মধ্যে মানুষ খুন করতে পারে। পেছনে বড় একটি কারণ, মাদক সেবন।

এএআর/