বয়সভিত্তিক দলের ক্রিকেটার শরিফুল ইসলাম লড়ছেন মরণব্যাধি ক্যান্সারের সাথে। কেমোথেরাপি দিতে মাথার সমস্ত চুল ফেলে দিতে হয়েছে তার। আর ছেলের দুঃখের সাথী হয়ে সাহস যোগাতে তার বাবাও ফেলে দিয়েছেন নিজের মাথার চুল। ভারতে চিকিৎসাধীন ছেলের জীবনের কঠিন সময়ে প্রতি মুহূর্ত পাশে থাকছেন বাবা।
মরণব্যাধি ক্যান্সারের কালো থাবায় তছনছ হয়ে গেছে কতো জীবন। কতো স্বপ্ন হয়েছে ধূলিসাৎ, কতো তরুণ-যুবকের জীবনের সোনায় মোড়ানো দিন গেছে হারিয়ে। আবার অনেকেই জীবনের এ কঠিন যুদ্ধকে জয় করে ফিরেছেন বাবা-মায়ের কোলে। এ সময়টা আর কেউ পাশে না থাকলেও পাশে থাকে পরিবার।
তেমনি একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী এখন বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক ক্রিকেটার শরিফুল ইসলাম। জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ে প্রতিটা মুহূর্ত পাশে পেয়েছেন বাবাকে। কেমোথেরাপি দিতে ফেলে দিতে হয়েছে তার মাথার সমস্ত চুল। ছেলের একাকীত্ব কাটাতে বাবা শুক্কুর আলীও হয়ে গেছেন কেশহীন। টানাপোড়নের সংসারে আর্থিকভাবে ছেলেকে সাহায্য করতে না পারলেও মানসিক সাপোর্ট দিতে কোনো কমতি রাখছেন না তিনি। সন্তানের চোখে যেমন বাবাই তার পৃথিবী, তেমনি বাবার ক্ষেত্রেও তো তাই।
একটা সময় বল-ব্যাট হাতে শরিফুল দাপিয়ে বেড়িয়েছেন বাইশ গজে; স্বপ্ন বুনেছেন লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ানোর। আফিফ হোসেন ধ্রুবদের সাথে মাঠ মাতিয়েছেন, খেলার কথা ছিল যুব বিশ্বকাপে। ক্রিকেট ছিল নেশা। বয়সটাও টগবগে ঘোড়ার মতো ছোটার, মানে না কোনো বাঁধা। সেই বয়সে শরিফুলের স্বপ্নে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ক্যান্সার।
গত বছরের অক্টোবরে মাঠে খেলা চলাকালীন হঠাৎই অজ্ঞান হয়ে পড়েন শরিফুল। হাসপাতালে নিলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ধরা পড়ে তার ক্যান্সার। অর্থাভাবে জীবনের আলো যখন অস্তমিত হবার পথে, ঠিক তখনই তার পাশে দাঁড়ায় বিসিবিসহ জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। সবার সাহায্যে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে শরিফুলের চিকিৎসার শুরু হয় ভারতে।
এখন অপেক্ষা সুস্থ হয়ে শরিফুলের মাঠে ফেরার। যেখানে বাবার মতো কোটি মানুষের ভালোবাসা আর দোয়া যে সঙ্গী শরিফুলের।
/এসএইচ