মানিকগঞ্জে হেলিকপ্টারে চড়ে বাড়ি ফিরলেন দুই প্রবাসী বিএনপি নেতা। এ সময় কাজী নাজমুল ও মুরাদ দেওয়ানকে ফুলেল ভালোবাসায় বরণ করে নেন এলাকাবাসী। হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় জমান উৎসুক জনতা।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের খুশিতে হেলিকপ্টারে বাড়ি ফেরার স্বপ্ন দেখেছিলেন এই দুই প্রবাসী। তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় খুশি পরিবারের সদস্যরাও।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের বনপারিল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তাদের বহনকারী প্রবাসী হেলিকপ্টার সার্ভিসের একটি হেলিকপ্টার অবতরণ করে। ইউনিয়নে প্রথবারের মতো কেউ হেলিকপ্টারে চড়ে বাড়ি আসার খবরে দুপুর থেকেই মাঠে ভিড় জমান উৎসুক জনতা। এ সময় বনপারিল গ্রামের কাজী নাজমুল ও মুরাদ দেওয়ানকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ও এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন পর তারা দেশে ফেরায় খুশি তারা।
প্রবাসে যাওয়ার আগে এরা দুইজন স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এরপর কাজী নাজমুল জাতীয়তাবাদী ফেরামের সৌদি আরবের মানিকগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আর মুরাদ দেওয়ান নির্বাচিত হন একই সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে।
স্থানীয় বাসিন্দা রতন মিয়া ও আরিফ বিশ্বাস জানান, ওরা দুইজন হেলিকপ্টার নিয়ে বনপারিল বাজারে নেমেছে, এতে আমরা খুবই খুশি। এর আগে কেউ আমাদের এলাকায় হেলিকপ্টারে করে আসেনি। এই দৃশ্য দেখার জন্য নারী-পুরুষসহ বহু দর্শক উপস্থিত ছিলেন। সবাই অধির আগ্রহে ছিলেন ২৩ অক্টোবরের জন্য।
হাটিপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শামীম মৃধা জানান, আজকে দেখেন কেথায় চলে গেছে বাংলাদেশের রাজনীতি। শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। আর ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে বের করে দিয়েছেন। উনি (শেখ হাসিনা) হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়েছেন। আর বিএনপির ছেলেরা এখন হেলিকপ্টারে করে দেশে ফিরছেন। যারা মামলা-হামলাসহ নানা হয়রানির কারণে বাংলাদেশে আসতে পারে নাই, আমি আশা করবো তারা সবাই দেশে ফিরবেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবেন।
হাটিপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জানান, নাজমুল ও মুরাদ দেশে আসায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাই। আমাদের ইউনিয়নে ওরাই প্রথমবারের মতো হেলিকপ্টার যোগে এলাকায় আসলো।
প্রবাসী কাজী নাজমুল ও মুরাদ দেওয়ান জানান, আপনারা অবগত আছেন বিগত দিনে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে হামলা-মামলা নির্যাতন হয়েছে। এর আগে বিদেশ থেকে দেশে আসলেও অনেকটা ভয়ে থাকতে হতো। কোনো মামলা হবে কি না, বিদেশে যেতে পারবো কিনা। আলহামদুলিল্লাহ এখন একটা নতুন বাংলাদেশ। অনেক স্বপ্ন ছিল, যদি হাসিনা সরকারের পতন হয় তাহলে স্বাধীন দেশে বুক ফুলিয়ে চলবো। সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। আমরা অনেক খুশি। গ্রামীবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীরা আমাদের রিসিভ করতে এসেছে।এজন্য তাদের প্রতিও অনেক কৃতজ্ঞতা।
কাজী নাজমুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে প্রবাসীদেরও অনেক ভূমিকা ছিল। তাই বর্তমান সরকার এবং আগামীতে যে নির্বাচিত সরকার আসবে তাদের কাছে প্রবাসীদের জন্য সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর দাবি জানাই। রেমিটেন্স যোদ্ধারা যেন দেশের বিমানবন্দরসহ সবখানে প্রাপ্য সম্মানটুকু পান।
বি.এম খোরশেদ/এফএ/এএসএম