প্রিয় পাঠক, শিরোনাম দেখে আপনি চমকে যেতে পারেন। ভাবতে পারেন এ কেমন কথা হলো! কিন্তু, আপনি যাই ভাবুন না কেনো ঘটনা আসলেই তাই- বৃহস্পতিবার মারা যাবেন বিজ্ঞানী ডেভিড গুডঅল। গত এপ্রিলে ১০৪ বছরে পা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ডেভিড গুডঅল। কিন্তু তার কাছে মনে হচ্ছে তিনি এক অর্থহীন জীবন বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন। বার্ধক্য তার কাছে অভিশাপ মনে হচ্ছে। তাই স্বেচ্ছামৃত্যুর সিদ্ধান্ত এই বিজ্ঞানীর। তাতেও বেঁধেছে সমস্যা। সেটি কী?
অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুযায়ী স্বেচ্ছা বা নিষ্কৃতি মৃত্যুর কোনো সুযোগ নেই। গুডঅলের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন স্বেচ্ছামৃত্যুর পক্ষে থাকা অনেকেই। এক্সিট ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি সংস্থারও সদস্য গুডঅল। পরিণত মানুষ যেন নিজের ইচ্ছায় ও পছন্দমতো উপায়ে মারা যেতে পারেন সে লক্ষ্যে কাজ করছে এই সংস্থাটি। কিন্তু, তাদের আশায় গুড়ে বালি। অস্ট্রেলিয়ায় স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি মেলেনি। এই বৃদ্ধ বিজ্ঞানী তাই পাড়ি জমিয়েছেন সুইজারল্যান্ডে। যে দেশে মানুষ ভ্রমণে গিয়ে বেঁচে থাকার রসদ খুঁজে পায় সেখানেই কিনা মৃত্যুর উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন গুডঅল! সুইজারল্যান্ডে পৌঁছানোর পর গুডঅলকে দেখতে ভিড় করেছেন অনেকেই।
১০৪ বছর বয়সেও শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন গুডঅল। কিন্তু তার উপলব্ধি, এই বয়সে কোনো স্বাধীনতা নেই। বাঁচতে হয় অন্যের উপর নির্ভর করে। অথচ, তিনি বরাবরই যুবকের মতো বাঁচতে চেয়েছিলেন। জীবনের শেষ প্রান্তে বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা আর ভালো লাগছে না গুডঅলের। বলেছেন, এই জীবন আর উপভোগ করছি না। আর বাঁচতে চাই না। এখন শুধু দুঃখগুলো সঞ্চয় করে রাখছি।
তার মতে, বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার থাকা উচিত। নিষ্কৃতি মৃত্যুর পক্ষে রাষ্ট্রের অনুমোদন থাকা উচিত বলে মনে করেন গুডঅল।
বৃহস্পতিবার (১০ মে) সুইজারল্যান্ডের বাসেলের এক ক্লিনিকে নিষ্কৃতি মৃত্যু হবে গুডঅলের। অগস্ত্যযাত্রার পথে ফ্রান্সে পরিবারের সাথে সময় কাটিয়ে এসেছেন তিনি। এখন শুধুই মৃত্যুর অপেক্ষা। এমন রূঢ় বাস্তবতা মেনে নেয়া সত্যিই কঠিন!
যমুনা অনলাইন: টিএফ