দিনাজপুরে পুলিশের সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল ইসলাম ও র্যাবের সাবেক ডিজি বেনজীর আহমেদসহ ১৮ জনকে আসামি করে মানবপাচারের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
মামলার বাদী দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার শেরপুর তেলিপাড়া গ্রামের মৃত ফরিদ উদ্দিনের ছেলে ও পার্বতীপুর উপজেলার জাহানাবাদ মন্ডলপাড়া জামে মসজিদের ইমাম আতিউল্লাহ সরকার (২৮)।
মামলার আসামিদের মধ্যে ১৩ জন পুলিশ ও র্যাব সদস্য এবং পাঁচজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে দিনাজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হুমায়ুন কবিরের আদালতে মামলাটি করা হয়।
বিচারক অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে পার্বতীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
বাকি আসামিরা হলেন পার্বতীপুর উপজেলার ৮ নম্বর হাবড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান সরকার, হাবড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামিল হোসেনক, একই ওয়ার্ডের বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি লুৎফুর রহমান ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক তহুবার রহমান, র্যাবের অ্যাডিশনাল এসপি নুরে আলম, আনোয়ার হোসেন, র্যাবের এসআই সোহেল রানা, র্যাব-৫ এর পরিদর্শক সোহেল রানা, আশরাফ উল আলম, র্যাবের হাবিলদার মহসিন আলী, ল্যান্স নায়েক মাহবুবুর রহমান, কনস্টেবল হুমায়ুন কবির, বিল্লাল হোসেন, এসআই আনিসুর রহমান, এএসআই সোহেল রানা, এসআই আনিছুর রহমান, পার্বতীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই সোহেল রানা ও রাজশাহীর রাজপাড়া থানার এসআই মোহাম্মদ মতিউর রহমান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৩ জুন রাত সাড়ে ৯টার দিকে পার্বতীপুর উপজেলার জাহানাবাদ মন্ডলপাড়া মসজিদে এশা ও তারাবিহর নামাজ চলছিল। এসময় ১৫-১৬ জন সাধারণ পোশাকে মসজিদে প্রবেশ করেন। এরপর মামলার বাদী আতিউল্লাহ সরকারকে বের করে নিয়ে আসেন। পরে মসজিদের সামনে থাকা তাদের গাড়িতে তুলে নিয়ে হাতকড়া লাগিয়ে দেন। এরপর মাথাসহ মুখমণ্ডল কালো টুপিতে আবৃত পরে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
গাড়িতে তুলে নিয়ে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। এরপর টানা ছয় ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে নেওয়ার পর চোখ বাধা ও হাতকড়া পরানো অবস্থায় অপরিচিত স্থানে (আয়নাঘর) বন্দি করে রাখা হয়। সেখানে ইলেকট্রিক শক দেওয়াসহ পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতন করা হয়।
ছয় মাসেরও বেশি সময় সেখানে থাকার পর ২০১৮ সালেন ৩১ জানুয়ারি রাজশাহী রাজপাড়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় আতিউল্লাহ সরকারকে।পরে র্যাব-৫ এর এসআই সোহেল রানা বাদী হয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করেন। পরে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়। ২০২২ সালের ১৪ মার্চ আদালতে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন ও কারাগার থেকে মক্তি পান।
দিনাজপুরের সিনিয়র আইনজীবী মাহবুবুর রহমান ভুট্টো ও বাদী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এমদাদুল হক মিলন/এসআর/এমএস