তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। আবেদনটি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার জজ আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেছেন।
এখন পর্যন্ত ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে পৃথক তিনটি আবেদন করা হয়েছে। আজ বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় রিভিউ আবেদন তিনটি ৪২ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।
এর আগে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেওয়া হয়। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত সপ্তাহে একটি আবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
পৃথক দুই রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে ২০ অক্টোবর। সেদিন আদালত আবেদন দুটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ২৪ অক্টোবর নির্ধারণ করেন।
আরও পড়ুন
এছাড়া ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে একটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, যেটি আজ চেম্বার আদালতে ওঠে। আবেদনকারীর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, চেম্বার আদালত রিভিউ আবেদনটি আগামীকাল বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছেন।
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়। এ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায়ে বলা হয়, ১৯৯৬ সালের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধানসম্মত।
এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করেন। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
এফএইচ/কেএসআর/এমএস