তিউনিশিয়ায় মেসাহারাতি হিসেবে কাজ করছেন পুরুষের বদলে নারী

0
1


রমজান মাসে সেহরির জন্য ড্রাম বাজিয়ে কিংবা ইসলামি গান গেয়ে মানুষকে ঘুম থেকে ডেকে তোলার দৃশ্য একসময় মুসলিম দেশগুলোর নিয়মিত রেওয়াজ ছিল। এখন সে রীতির খুব একটা প্রচলন নেই। তবে আধুনিক এই যুগে এখনও কোথাও কোথাও দেখা মেলে তাদের। আরব বিশ্বে যারা মেসাহারাতি নামে পরিচিত। সাধারণত পুরুষদের এই কাজ করতে দেখা গেলেও তিউনেশিয়ায় রমজানজুড়ে মানুষকে সেহরির জন্য জাগানোর কাজ করছেন এক নারী।

সবাই যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তার কাজ শুরু হয় তখন। ঘড়ির কাঁটায় ভোর তিনটা বাজলেই বেড়িয়ে পড়েন সড়কে। ড্রাম বাজিয়ে প্রতিবেশীদের ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলেন সেহরির জন্য।

আরব বিশ্বে যারা এই কাজ করেন তারা পরিচিত ‘মেসাহারাতি নামে’। প্রাচীন আরবের জনপ্রিয় এই পেশা অবশ্য অ্যালার্ম ঘড়ির আধুনিক এই যুগে হারিয়ে যেতে বসেছে। তারপরও মুসলিম বিশ্বজুড়ে গুঁটিকয়েক মানুষকে এখনও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে দেখা যায়।

মূলত মেসাহারাতিতে পুরুষদেরই বেশি দেখা যায়। তবে ব্যতিক্রম তিউনিশিয়ার মোনিরা নামের পঞ্চাশ বছর বয়সী এই নারী। ড্রাম পিটিয়ে রমজানজুড়েই মানুষকে জাগানোর দায়িত্ব পালন করছেন প্রবীণ এই নারী। বৃদ্ধ মা ও অস্বচ্ছল পরিবারকে একটু ভালো খাবার খাওয়াতেই রমজানে এই মৌসুমি পেশা বেছে নিয়েছেন তিনি।

মোনিরা কিলানি নামের এই মৌসুমি ড্রাম বাদক বলেন, অন্যদের মতো মাংস খাওয়ার সৌভাগ্য আমাদের হয় না। খাবার জন্য শাক-সবজি পেলেই আমরা খুশি হয়ে যাই। রমজানে অবশ্য এই কাজ করে কিছু আয় হয় আমার। ভিক্ষা কিংবা চুরির বদলে আমি কাজ করে খাচ্ছি। এটা পুরুষের কাজ হলেও নারী হয়ে আমি করছি। কারণ পরিবারকে একটু ভালোমন্দ খাওয়ানোর জন্যই আমি মেসাহারাতি হয়েছি।

মোনিরার বাবাও রমজানে মেসাহারাতির কাজ করতেন। কল্পনাও করেননি তাকেও একদিন বাবার মতোই মেসাহারাতি হতে হবে। প্রতিবেশীরাও বেশ উপভোগ করেন আধুনিক যুগের এই নারী মেসাহারাতিকে। ঈদের সময় সবাই মিলে চাঁদা তুলে দেন তার পারিশ্রমিক।

এটিএম/